স্পেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের মনোনীত সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিন বলেছেন, দলের ত্যাগী, নির্যাতিত ও পোড় খাওয়া নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে অনুগতদের’ দিয়ে স্পেন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যক্তি বিশেষের ভাগাভাগির ‘পকেট’ কমিটি হয়েছে বলে দলের সিনিয়র নেতারা এই কমিটি প্রত্যাখান করেছেন। অল ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বিগত দিনে নির্যাতিত ও পোড় খাওয়া নেতাকর্মীদের কোনো মতামত না নিয়েই কমিটি ঘোষণা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানী মাদ্রিদের একটি রেস্তোরাঁয় অল ইউরোপ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের অনৈতিক ও সাংগঠনিক নীতি বিরুদ্ধ কার্যকমের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্পেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের মনোনীত সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিন আরও বলেন, ঘোষিত কমিটি নিয়ে দলের কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করেছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অল ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বিরুদ্ধে ‘পকেট’ কমিটি দেয়ার অভিযোগ করে দলীয় সভা নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মাদ্রিদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই স্মারক লিপি প্রদান করেছেন।
বোরহান উদ্দিন বলেন, আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে স্পেনে আসলে দলীয় সভা নেত্রীকে গণসংবর্ধনা দিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আওয়ামীলীগের শত শত নেতাকর্মীকে একত্রিত করে স্পেন তৃনমুল আওয়ামীলীগ। সে সময়েও নেত্রীর সান্নিধ্যে গিয়ে স্পেন তথা ইউরোপে আওয়ামীলীগের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা কিংবা মতামত ব্যক্ত করার সুযোগও দেওয়া হয়নি তাদেরকে।
সে সময় নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের নিরাপত্তা কর্মী রাখা হয় এবং হাতের ইশারা দিয়ে ২৫/৩০ জনের জামাত বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢুকিয়ে দিয়ে অনাকাংক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বিতর্কিত নব্য গঠিত স্পেন আওয়ামীলীগের কমিটির সদস্য, দূতাবাস ও নিজেদের নির্বাচিত স্থানীয় অতিথিদের নিয়ে খুবই সীমিত আকারে হোটেল লবিতে নেত্রীকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের নেত্রীর সান্নিধ্যে যেতে না দেওয়াই ছিলো এর মূল উদ্দেশ্য।
সংবাদ সম্মেলনে স্পেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের মনোনীত সাধারন সম্পাদক এ কে এম সেলিম রেজা বলেন, ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে এম নজরুল ইসলামকে সর্ব ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি তৃণমূলের মতামত অগ্রাহ্য করে ‘অর্থের বিনিময়ে পকেট কমিটি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিতে লিপ্ত হয়েছেন। স্পেন আওয়ামীলীগের ভবিষ্যতকে সংকটে ফেলছেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যে লোক যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মুক্তি আন্দোলন কমিটির অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন, তাকে কীভাবে আওয়ামী লীগ স্পেন শাখার সভাপতির পদ দেওয়া হয়? এমন অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় সর্ব ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলামকে পদ থেকে প্রত্যাহার ও দল থেকে বহিস্কারের জন্য দলীয় সভানেত্রীর কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি নবগঠিত স্পেন আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অর্থের বিনিময়ে জামাত বিএনপির নেতাকর্মীদের অন্তভুক্তির বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্তের জোর দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্পেন আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা আক্তার হোসেন আতা, ইসলাম উদ্দিন শেখ, সদ্য বিলুপ্ত স্পেন আওয়ামী লীগ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জসিম উদ্দিন, স্পেন যুবলীগের আহবায়ক ইফতেখার আলম, স্পেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন রায়হান সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।