বরিশালে চতুর্থ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। পরে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ এবং দুই প্রতিবেশী ধর্ষণকান্ডে জড়িত বলে অভিযোগ করেছে সেই শিশু ও তার মা।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে (১২) হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে গত ১০ই ডিসেম্বর ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বিছানায় প্রসব বেদনায় কাতর শিশুটি জানায়, প্রায় নয় মাস আগে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে প্রথমবারের মতন ধর্ষণ করেন। অন্য এক নারী শিক্ষক এতে সহায়তা করেন বলেও জানা যায়। পরে তাকে দুই প্রতিবেশী জুয়েল ও রনি খালি বাসায় ঢুকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ-২-এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মৃদুলা কর বলেন, শিশুটির গর্ভের প্রকৃত অবস্থা জানতে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত টাকার অভাবে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেনি শিশুটির পরিবার। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই তার শারীরিক অবস্থা জানা যাবে। তবে অপরিণত বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ওই শিশুর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
উক্ত ঘটনায় ২২ আগস্ট নির্যাতিতার মা বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে, ধর্ষক শিক্ষক ও দুই প্রতিবেশীর নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়নি বলে জানায় নির্যাতিতা। এমনকি উপজেলার ফরিদপুর ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, স্থানীয় প্রভাবশালী ও স্কুলের শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের নাম বলতে নিষেধ করেন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। প্রধান শিক্ষকের নাম বললে সে কোনো বিচার পাবে না এবং লোকে তাকেই বরং খারাপ জানবে বলেও ভয় দেখানোর চেস্টা করেন বলে অভিযোগ করে শিশুটি। কোনরকমে দায়সারা গোছের তদন্ত শেষে পুলিশও এই মামলায় জুয়েল নামে এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। মামলায় প্রধানশিক্ষকের এবং রনির নাম উঠেনি। বর্তমানে শুধু জুয়েল কারাগারে রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে নির্যাতিতাকে দেখতে হাসপাতালে যান বরিশালের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি ওই শিশুর চসুক্রবার সকল ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেন এবং উক্ত ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। মামলার অভিযোগপত্র থেকে কেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্যদের বাদ দেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।