দেশের মানুষ যেভাবে চলাফেরা করছে, তাতে ভ্যাকসিন আসার আগেই হয়তো ৮০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাবে। অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। সঙ্গে মাস্ক নিয়ে ঘুরলেও তা পরছেন না। এখন তো দৈনিক নমুনা পরীক্ষায় ২২-২৩ শতাংশ মানুষের করোনা পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। এর অর্থ হলো পরীক্ষা না হওয়া অনেক সংক্রমিত মানুষ সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিজের অজান্তেই রোগ ছড়াচ্ছে। গত মঙ্গলবার ভাইরোলজিস্ট ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম গনমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ ছাড়া এখন তো অনেক আক্রান্তেরই উপসর্গ প্রকাশ পাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে না পারলে করোনাভাইরাস আপনা-আপনি চলে যাবে না। অনেক মানুষ আক্রান্ত হবে, মারা যাবে। আমাদের যত টেস্ট হওয়ার দরকার, সেটা হচ্ছে না।
ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, গত ঈদের পর থেকে বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত অনেক বেড়ে গেছে। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের অনেকে হয়তো এমনিতেই ভালো হয়ে যাচ্ছেন। তরুণরা সুস্থ হলেও বয়স্করা কিন্তু খুব কমই সুস্থ হয়ে ফিরছেন। কারণ, আগে থেকে নানা রকম শারীরিক সমস্যা থাকায় বয়স্করা আক্রান্ত হলে ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ভ্যাকসিন আসার আগ পর্যন্ত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এখন তো অনেক আক্রান্তেরই উপসর্গ প্রকাশ পাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে না পারলে করোনাভাইরাস আপনা-আপনি চলে যাবে না। অনেক মানুষ আক্রান্ত হবে, মারা যাবে। ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের যত টেস্ট হওয়ার দরকার, সেটা হচ্ছে না।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে পারছি না। দুই মাস আগেও যত মানুষ মাস্ক পরে বের হতেন, এখন সেটাও দেখছি না। অনেকে মাস্ক নিয়ে ঘুরলেও তা থুঁতনিতে লাগিয়ে রাখছেন। এ নিয়ে বলতে গেলে উল্টো প্রশ্ন করছেন। এ জন্য সচেতনতামূলক প্রচারণার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। দেশের কিছু এলাকায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে, বেশিরভাগ এলাকাতেই নেই। ঢাকার রাজাবাজার ছাড়া আর কোথাও লকডাউন করা হয়নি। এ ব্যাপারে তৎপরতাও খুব একটা দেখছি না।
এ ছাড়া লকডাউনের উদ্দেশ্য মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা, মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা। সংশ্লিষ্ট এলাকার সব আক্রান্তকে চিহ্নিত করে তাদের আইসোলেশনে নেওয়া, অন্যদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা। সেটা হচ্ছে না। এভাবে চললে খুব কম সময়ের মধ্যে দেশের অধিকাংশ মানুষই আক্রান্ত হয়ে যাবে। অনেক প্রাণহানি হবে।
এ ভাইরোলজিস্ট বলেন, বস্তিতে সংক্রমণ কম দেখছি। হয়তো সংক্রমণ আছে, কিন্তু সেইভাবে মৃত্যু নেই। এটা কেন হচ্ছে সেটা জানতে হবে। হয়তো কোনো কিছুর কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার।