রাজশাহীর চারঘাট-পুঠিয়া উপজেলার সীমান্তে সালিশ চলাকালীন সংঘাতের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে চারঘাট মডেল থানা ও পুঠিয়া থানায় একটি করে মামলা দায়ের হয়।
এরই মধ্যে দুই মামলায় ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (১০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ বলছে, চারঘাট মডেল থানায় দায়ের হওয়া মামলার বাদী ওই সংঘর্ষে নিহত ভ্যানচালক রেজাউল করিমের ছেলে আব্দুল্লাহ। এই মামলার এজাহারে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও শতাধিক। শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে এ মামলার ১৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, পুঠিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সইবুর রহমান। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ৫০ জন। পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩শ’ থেকে ৪শ’। এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন আট জন।
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। রোববার তাদের আদালতে নেয়া হয়। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, পুলিশের দায়ের করা মামলায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের রোববার দুপুরের দিকে আদালতে নেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, যারাই এই ঘটনায় জড়িত, আমরা তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলে আসা বিরোধ মেটাতে শনিবার বিকেল তিনটার দিকে জেলার চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী শিশুতলা-বটতলা এলাকায় সালিশ বসে। সেখানে পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু ও চারঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুঠিয়া সার্কেল) আবুল কালাম সাহিদ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চারঘাট) মো. নুরে আলমসহ পুঠিয়া ও চারঘাট থানার শীর্ষ কর্মকর্তারাও। সালিশ চলাকালীন দুপক্ষের মধ্যে সংঘাত বেধে যায়। এতে পুলিশসহ আহত হন দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন।
রাজশাহী মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান সংঘর্ষে আহত ভ্যানচালক রেজাউল করিম (৫০)। তিনি চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের শিবপুর এলাকার হালিম উদ্দিনের ছেলে।
ঘটনার পর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এলাকায়। গ্রেফতার এড়াতে বাড়ি ছেড়েছেন পুরুষ সদস্যরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।