করোনায় বিপর্যস্ত ভারত। মৃত্যু ও সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না কোনওভাবেই। প্রতিদিন যত মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, তাদের দাহ করতে পর্যাপ্ত শ্মশান নেই রাজধানী নয়াদিল্লিতে। বাধ্য হয়েই তাই তৈরি করা হচ্ছে নতুন নতুন শ্মশান।
কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এসব তথ্য দিয়েছে সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তছনছ হয়ে গেছে ভারত; মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সোমবার নয়াদিল্লিতে ৩৮০ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। অন্য এলাকাগুলোতেও বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত রোগীর চাপ পড়ায় দেশটির হাসপাতালগুলোর এখন বেহাল দশা। স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। অক্সিজেন, হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) এমনকি জীবন রক্ষাকারী ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে না।
গত সপ্তাহে দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে যতজনের মৃত্যুর তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে এনডিটিভির এক অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের বেশ অমিল পাওয়া গেছে। তারা বলছে, অতিরিক্ত ১১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার তথ্য লুকিয়েছে সরকার। অন্য কয়েকটি অনুসন্ধানেও এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
বিবিসি বলছে, মৃতদের স্বজনদের সঙ্গে শ্মশান, কাঠ-পাথর কাটা এবং অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠানে সাহায্য করার জন্য সারা রাত ধরে শ্মশানঘরের কর্মীরা কাজ করছেন।
দিল্লিতে শ্মশান বানানোর জন্য পার্ক বা খালি মাঠের মতো জায়গা খোঁজা হচ্ছে। মৃতের পরিবারগুলিকে প্রায়ই তাদের মৃতদেহ দাহ করতে শ্মশানে গিয়ে অনুমতির জন্য ঘন্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
গত কয়েকদিনে রাজধানীর সারাই কালি খান শ্মশানে অন্তত ২৭টি চিতার স্থান বানানো হয়েছে, আশপাশেও শ্মশানে স্থান বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে পৌর কর্তৃপক্ষ যমুনা নদীর তীরে শ্মশানের জন্য জায়গা খুঁজছে।
২২ জনকে দাহ করার ব্যবস্থা আছে এমন এক শ্মশানের কর্মী দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত মৃতদেহ দাহ করার কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাদের।
পূর্ব দিল্লির গাজীপুর শ্মশানে অতিরিক্ত ২০টি চিতা জ্বালানোর স্থান তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে সেখানকার এক কর্মী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, মৃতদেহ দাহ করতে আসা ব্যক্তিদের কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সূত্রঃ বিবিসি, সমকাল